সম্মানিত প্রধান অতিথি, শ্রদ্ধেয় শিক্ষকবৃন্দ, প্রিয় অভিভাবকগণ এবং আমার প্রিয় সহপাঠী ও বন্ধুগণ, আসসালামু আলাইকুম।
আজকের এই বিশেষ দিনে, আমি গভীর আবেগ ও কৃতজ্ঞতা নিয়ে কথা বলতে এসেছি। দীর্ঘ একাডেমিক পথচলার পর আজ আমাদের বিদায়ের দিন। এটি যেমন আনন্দের, তেমনি বেদনাদায়কও।
একটি বিদায় অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বক্তব্যে অবশ্যই তিনটি বিষয় থাকতে হবে। বক্তব্যে তার স্মৃতি ও অভিজ্ঞতার বিষয়, শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা সহ ভবিষ্যতের দিক নির্দেশনামূলক কথা থাকা দরকার।
স্মৃতি ও অভিজ্ঞতা:
এই বিদ্যালয় শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়; এটি আমাদের দ্বিতীয় পরিবার। এখানেই আমরা পড়াশোনার পাশাপাশি নৈতিকতা, শৃঙ্খলা ও মানবিকতার শিক্ষা পেয়েছি। আমাদের প্রিয় শিক্ষকগণ শুধু পাঠ্যপুস্তক পড়িয়েই দায়িত্ব শেষ করেননি, বরং জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
আমাদের সহপাঠীদের সঙ্গে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত-হাসি-আনন্দ, খেলাধুলা, পরীক্ষার প্রস্তুতি-সবকিছুই আমাদের হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা:
আমাদের সফলতার পেছনে শিক্ষকদের অবদান অনস্বীকার্য। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ধৈর্য্য আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। তাদের প্রতি আমাদের অশেষ কৃতজ্ঞতা।
ভবিষ্যতের পথে:
আজ আমরা নতুন এক অধ্যায়ের সূচনায় দাঁড়িয়ে আছি। ভবিষ্যতে অনেক চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনার সম্মুখীন হবো। তবে আমরা বিশ্বাস করি, এই বিদ্যালয়ে অর্জিত জ্ঞান ও মূল্যবোধ আমাদের যেকোনো বাধা অতিক্রম করতে সাহায্য করবে।
শেষ কথা:
আমি আশা করি, আমরা সবাই জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফল হবো এবং বিদ্যালয়ের নাম উজ্জ্বল করবো। বিদায়ের এই মুহূর্তে আমি সবার জন্য দোয়া করি এবং শুভকামনা জানাই।
ধন্যবাদ।
আরও দেখুন: বাংলায় বক্তব্য শুরু করার নিয়ম: বক্তব্য শুরুতে কি বলতে হয়।
HSC বিদায় অনুষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নমুনা বক্তব্য
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আসসালামু আলাইকুম। আমি আমার বিদায়ী বক্তব্যের শুরুতেই মঞ্চে উপবিষ্ট সম্মানিত সভাপতি, সম্মানিত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ ও আমার সহপাঠী ও সম্মানিত সুধীজন সবাইকে জানাচ্ছি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
আজকের দিনটি আমাদের জন্য স্বাভাবিকভাবেই বেদনাবিধুর, দীর্ঘ সময়ের পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে আমরা আজ দীর্ঘদিনের প্রাণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছেড়ে বিদায় নিতে যাচ্ছি।
তবে এই বিদায় একদিকে যেমন বেদনার তেমনি অন্যদিকে সম্ভাবনারও। উচ্চতর শিক্ষার হাতছানির ডাকে সাড়া দিয়ে নিজেকে আরো যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলার এগিয়ে যাওয়ার জন্যই এই চলে যাওয়া।
আজকের এই দিনটিতে আমার মনে পড়ছে এই তো সেদিন আমরা নবীন ছিলাম, আমাদেরকে বরন করার জন্য যেনো সাজ সাজ রবে ভরে উঠেছিলো আমাদের এই বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ।
হাটি হাটি পা পা করে আজ এই বিদ্যালয়ে আমরা অগ্রজ হয়ে উঠেছি, তাই আমাদের বিদায় নেবার সময় হয়েছে।
কবির চরনখানি আমার বারবার মনে পড়ছে আজ–
এসেছে নতুন শিশু, ছেড়ে দিতে হবে তাকে স্থান;
আমাদের চলে যেতে হবে জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসস্তূপ-পিঠে।
আজ চলে যাব- কিন্তু যতক্ষণ আছে এ দেহে আছে প্রাণ, প্রাণপণে পৃথিবীর সরাবো সব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এই শিশুদের বাসযোগ্য ক’রে যাব, আমি নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
এই বিদ্যালয়ের দীর্ঘ সময়ের অতিক্রম করায় শিক্ষকদের যে ভালোবাসা ও সহযোগিতা পেয়েছি তা ভুলার মত নয়। সময়ে সময়ে পেয়েছি কড়া শাসনও যে আমরা আমাদের পথ থেকে বিচ্যুত না হই।
যে সুন্দর স্বপ্ন আমাদের সম্মানিত শিক্ষকেরা দেখিয়েছেন মানুষের মতো মানুষ হয়ে দেশসেবায় নিয়োজিত হতে পারি সেই স্বপ্নের মর্যাদা আমাদের হৃদয়ে যেন আমরা বহন করছি।
সকলের কাছে আকুল চিত্তে দোয়া চাইছি যেনো এই বিদ্যালয় ও শিক্ষকদের সম্মান রাখতে পারি। আপনারা আমাদের জন্য দেওয়া করবেন।
আমার যারা সহপাঠী, ছোট বাই-ভাই বোন রয়েছেন তাদের সাথে দীর্ঘদিনের স্মৃতি সহজেই ভুলে যাবার নয়। তাদের সকলের প্রতি আমার ভালোবাসা ও শুভ কামনা।
পরিশেষে আজকের এই বিদায়ের ঘনঘটায় সম্মানিত অতিথিবৃন্দ, সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ প্রিয় সহপাঠী ও স্নেহের অনুজ সকলের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়ে আমার বক্তব্য শেষ করছি কবির ভাষায় তার কবিতার প্রিয় দুটি চরন দিয়ে –
আমার হয়তোবা এ পথে আর হবে নাকো আসা তবে দুয়ারে যাই রোপন করে বুকের অফুরন্ত ভালোবাসা।
ধন্যবাদ সবাইকে।
HSC বিদায় অনুষ্ঠানের নমুনা বক্তব্য
সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ, আমার প্রিয় সহপাঠী এবং উপস্থিত সুধীজন,
আজ এক বিশেষ দিন। আজ আমরা আমাদের শিক্ষা জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় শেষ করতে যাচ্ছি। এই বিদায় আমাদের জীবনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। আজ এখানে দাঁড়িয়ে আমি একই সাথে আনন্দিত এবং আবেগাপ্লুত। আনন্দিত এই ভেবে যে আমরা আমাদের স্বপ্ন পূরণের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছি। আর আবেগাপ্লুত এই ভেবে যে আজ আমাদের প্রিয় বিদ্যাপীঠ, প্রিয় শিক্ষক এবং প্রিয় বন্ধুদের কাছ থেকে দূরে সরে যেতে হচ্ছে।
এই বিদ্যাপীঠ আমাদের শুধু পুঁথিগত বিদ্যাই দেয়নি, দিয়েছে জীবনের অমূল্য শিক্ষা। এখানে আমরা শিখেছি কিভাবে প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করতে হয়, কিভাবে স্বপ্ন দেখতে হয় এবং কিভাবে সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হয়। আমাদের শিক্ষকেরা শুধু আমাদের শিক্ষক ছিলেন না, ছিলেন আমাদের পথপ্রদর্শক, বন্ধু এবং অভিভাবক। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং স্নেহ-ভালোবাসা আমাদের আজকের এই অবস্থানে নিয়ে এসেছে।
প্রিয় বন্ধুরা, আজ আমরা জীবনের এক নতুন পথে পা বাড়াচ্ছি। এই পথ হয়তো কঠিন হবে, কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা একা নই। আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং দৃঢ় সংকল্প যেকোনো বাধা অতিক্রম করতে সক্ষম।
আজকের এই বিদায় যেন আমাদের জন্য হয় নতুন শুরুর অনুপ্রেরণা। আমরা যেন আমাদের জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে পারি। আমাদের এই বিদ্যাপীঠের সুনাম যেন আমরা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে পারি।
আরও দেখুন: বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য বাংলা (এক আবেগঘন মুহূর্তের গল্প)।
পরিশেষে, আমি আমাদের শিক্ষক এবং বিদ্যাপীঠের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আপনাদের ঋণ আমরা কখনো শোধ করতে পারবো না। আপনারা আমাদের হৃদয়ে চিরকাল অমলিন থাকবেন।

আমি একটি কোম্পানির পাবলিক রিলেশনশিপ অফিসার হিসাবে কর্মরত আছি। আমার কর্মক্ষেত্রে সরাসরি জনগনের সাথে ডিল করার তাই আমি পাবলিকলি অনেক বক্তব্য দেওয়ার প্রয়োজন পরে। তাছাড়াও বক্তব্য দেওয়া ও শোনাকে আমি বেশ উপভোগ করি।

1 thought on “HSC বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য (শিক্ষার্থীদের জন্য)”